ক) আয়তন ও অবস্থানঃপাইকগাছা উপজেলার আয়তন ৩৮৩.১৫ বর্গ কিঃ মিঃ। ইহা ২২০২৮’’ এবং ২২০৪৩’’ উত্তর-দক্ষিণ দ্রাঘিমাংশ এবং ৮৯০১৪’’এবং ৮৯০২৮’’ পূর্ব পশ্চিম দ্রাঘিমার মধ্যে পাইকগাছা উপজেলা অবস্থিত। ইহার উত্তরে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা, পূর্বে খুলনা জেলার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা, দক্ষিণে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা এবং পশ্চিমে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনী উপজেলা অবস্থিত । খুলনা জেলা শহর হতে সড়ক পথে পাইকগাছা উপজেলার দুরত্ব ৬৫ কি.মি.।
খ) নামকরণঃখুলনা জেলার একটি প্রচীন ও প্রসিদ্ধ উপজেলা পাইকগাছা। খুলনা জেলা সদর হতে পাইকগাছা উপজেলা ৬৫ কিঃ মিঃ দক্ষিনে অবস্থিত। সরলের দীঘি,সরল খাঁর বাড়ী ও কাছারীর পাশে চাল ধোয়ার পুকুর ও রাসত্মার অপর পাশে থানার পুকুর কালের সাক্ষী হিসেবে আজও বিদ্যমান । কয়েকটি গ্রাম সরল খাঁর সৈন্য বা কর্মচারীদের কাজের স্বাক্ষী। সরল খাঁ যে এলাকায় বাস করতেন তার নাম হয় সরল। গরম্নর রাখালদের আবাসস্থল‘গোপালপুর’ গরম্নরাখার জন্য যেখানে গোশালা ছিল সে গ্রামের নাম ‘ঘোষাল,’ গদাইপুরের নিকটে যেখানে সৈন্যরা গড়কেটে ডাকাতদের বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ছিল সেটা ‘গড়পার’,প্রাসাদের বান্দিদের আবাসস্থল ‘বান্দিকাটি’,প্রাসাদে বাতি জ্বালানো কার্যে নিয়োজিত কর্মচারীরা যে এলাকায় থাকত‘বাতিখালী’,গাছে চড়ে পাইক-বরকন্দাজরা পাহারা দিত বলে ‘পাইকগাছা’এবং লোক- লস্কর দিয়ে যে দীঘি খনন করা হয়েছিল সে এলাকা ‘লস্কর’ গ্রাম হিসেবে আজও সরল খার কীর্তি বহন করছে। এভাবেই পাইকগাছা উপজেলার নাম করণ করা হয়।৭ নভেম্বর ১৯৮২ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরনের আওতায় পাইকগাছা উপজেলায় উন্নিত হয়।
গ) ঐতিহাসিক ঘটনাবলীঃ ১৯৭১ সালের ৪ জুলাই পাইকগাছা উপজেলার প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র কপিলমুনি বাজারে রায়বাহাদুর বিনোদ বিহারী সাধুর বাড়ীতে রাজাকারের ক্যাম্প স্থাপিত হয়। রাজাকার এবং শামিত্ম কমিটির লোকেরা অত্র এলাকায় ব্যাপক লুটপাট,ধর্ষন,অগ্নিসংযোগ,ও হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করতে থাকে। এলাকার সুন্দরী যুবতী মেয়ে ও স্ত্রীদের ধরে নিয়ে ক্যাম্পে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে হত্যা করতো। রত্না নামের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলে এবং পেট ফেড়ে নদীতে ভাসিয়ে দেয়। এ জাতীয় নৃশংস হত্যা কান্ড দেখে এলাকার জনগণ এবং মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ফুসে উঠে। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ঐ রাজাকার ক্যাম্পটি দখলের জন্য যুদ্ধকালীন কমান্ডার রহমত উলস্নাহ দাদু ও তার সহযোগী ইউনুস আলী, স,ম, বাবর আলী, আবুলকালাম আজাদ, শাহাদৎ হোসেন বাচ্চু ও যুদ্ধাহত খোকা এর নেতৃত্বে ঐ রাজাকার ক্যাম্প টি দখলের সাড়াসী অভিযান শুরম্নকরেন। তিন দিন একটানা যুদ্ধের পর ১৫৬ জন রাজাকার ও শামিত্ম কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধাদের হতে বন্দি হন। অত্যাচারী রাজাকার ও শামিত্ম কমিটির ১৫৬ জন সদস্যকে হত্যার মাধ্যমে ৯ ডিসেম্বর কপিলমুনি যুদ্ধের অবসান হয়। ঐতিহাসিক কপিলমুনির ঐ স্থানটি দেখার জন্য আজও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন সেখানে ভিড় জমায়।
কিভাবে যাওয়া যায়ঃ
খুলনা সদর থেকে বাস যোগে সরাসরি কপিলমুনি নামতে হবে। কপিলমুনি বাজারের পশ্চিমপার্শ্বে ঐতিহাসিক রায়সাহেব বিনোদ বিহারীর বাড়ীটি এখন কালের স্বাক্ষী হিসেবে দাড়িয়ে রয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস