Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

 

বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পি,সি,রায়) ১৮৬১ সালের ২ আগষ্ট খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী রাড়ুলীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৬৬ থেকে ১৮৭০ সাল এ চার বছর কাটে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর ১৮৭১ সালে ভর্তি হন কলিকাতার হেয়ার স্কুলে। সেখানে পাঠ শেষে ১৭৭৪ সালে তিনি ভর্তি হন আলবার্ট স্কুলে। সেখান থেকে তিনি ১৮৭৮ সালে এন্ট্রান্স এবং ১৮৮১ সালে এফ,এ পাশ করেন। ১৮৮২ সালে পেসিডেন্সী কলেজ থেকে অনার্স সহ স্নাতক শ্রেনীতে অসাধারণ মেধার দিয়ে গিলক্রিইষ্ট বৃত্তি নিয়ে চলে যান গ্রেটবৃটেনের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকেই তিনি বি,এস,সি ডিগ্রী নেন। রসায়ন শাস্ত্রে গবেষণারত প্রফুল্ল চন্দ্র মারকুইরাস নাইট্রাইট-এর মত মৌলিক পদার্থ উদ্ভাবন করে চমক দেন বিশ্বকে। তিনি ১৮৬৬ সালে সম্মানসূচক পিএইচডি,১৮৮৯ সালে ডিএসসি, ১৯১১ সালে সিআই, ১৯১২ সালে ডিএসসি এবং ১৯৯৮ সালে নাইট উপাধি পান। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন অবিবাহিত। দেশ-বিদেশ তার প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আজও মানব সেবা দিচ্ছে। ফাদার নাইট্রাইট খ্যাত বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার পি,সি রায় এর রাড়ুলীস্থ বসত ভিটায় গত কয়েক বছর যাবৎ সরকারি উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে তার জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী। বর্তমানে পি,সি রায়ের জন্ম ভিটা সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সংরক্ষণ করছে। দেশ-বিদেশের বিরল সাধনার ক্ষেত্রে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু এর পাশাপাশি সি,সি রায় বাঙালীকে করেছেন মহিমান্বিত। ,সি রায় ছিলেন একাধারে বিজ্ঞানী,দার্শনিক ও শিল্পী। ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন জীবনাবসান ঘটে মহান মণীষী ও বিজ্ঞানী স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের।

 

 

রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু

রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ১২৯৬ বঙ্গাব্দের ২৬ বৈশাখ শুক্লাষ্ঠমী তিথিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিনোদ ভবনে বড় হয়ে ওঠেন পিতা যাদব চন্দ্র সাধু, মাতা-সহচরী দেবীর কোলে। কপিলমুনি মহাভারতের মুনি কপিলের নামে নামকরণকৃত একটি ছোট জনপদ। তিনি ছোট বেলায় পিতাকে হারিয়ে পড়ালেখা ছেড়েছিলেন মাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে। পিতৃদত্ত ব্যবসায়ী জ্ঞান ও স্যার পি,সি রায় এর পরামর্শে তিনি ব্যবসা আরম্ভ করেন। তিনি কলকাতায় খাটি সরিষার তেল এর মিল স্থাপন করেন। সেখান থেকে তিনি প্রতিষ্ঠিত হন এবং বর্তমানে কপিলমুনিতে অবস্থিত এই বাড়িতে তিনি জীবন অতিবাহিত করেন। বাংলা ১৩৪২ সালের ৩ মাঘ প্রথিতযশা ও ব্যবসায় জগতের এ দিকপাল পরলোকগমন করেন।

 

 

সু-সাহিত্যিক কাজী এমদাদুল হক

বিংশ শতাব্দীর সূচনা লগ্নে যে সকল বাঙ্গালী মুসলমান মননশীল গদ্য লেখক বিশিষ্ঠতা অর্জন করেন “আব্দুল্লাহ” উপন্যাস খ্যাত কাজী এমদাদুল হক তার মধ্যে অন্যতম। তিনি ১৪৪২ সালে ৪ নভেম্বর খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গ্রামের স্কুলের পাঠশেষে ১৮৯০ সালে খুলনা জেলা স্কুলে ভর্তি হন। তিনি ১৮৯৬ সালে এন্ট্রাস পাশ করেন। ১৮৯৮ সালে তিনি কলকাতা মাদ্রাসা থেকে এফ এ পরীক্ষায় পাস করেন। তার পর তিনি কলকাতা প্রেসিডেস্নি কলেজ থেকে ডিগ্রী নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ পাশ করেন। কাজী এমদাদুল হক “আব্দুল্লাহ” উপন্যাস যে বিষয়বস্তু উপস্থাপনা করেছেন সে সম্পর্কে আব্দুল কাদির মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বাঙ্গালী মুসলমান সমাজে যে অবস্থা বিরাজ করছিল তার একটি নিখুঁত চিত্র “আব্দুল্লাহ” উপন্যাসে বিধৃত হয়েছে। কিন্ত সে দিনের সমাজ জীবন ও ব্যক্তি মানুষের এ সকল সমস্যা যে বিরোধ ও বাধার সৃষ্ঠি করেছিল আব্দুল্লাহ তার এক মনোরম আলেখ্য। কাজী এমদাদুল হক বৈচিত্রপূর্ণ সাত্যি সৃষ্ঠির অধিকারী হলেও তার প্রধান কৃতিত্ব “আব্দুল্লাহ” উপন্যাস ১৯২৬ সালে কাজী এমদাদুল হক কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন।

 

 

 

 

দানবীর মেহের মুসল্লী

খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলায় যে সকল গুণী এবং বরেণ্য ব্যক্তিদের জন্ম ও আগমন ঘটেছে তাদের মধ্যে মেহের মুসল্লী অন্যতম। ঝাটার কাটি বিক্রী করে এবং কুলিগিরি করে অর্জিত সকল অর্থ দান করে তিনি দানবীর খেতাব লাভ করেন।তিনি বাংলা ১২৪৮ সনে গদাইপুর গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। খেদমত এবং ফরহেজগার ব্যক্তি হিসাবে এলাকার মানুষ তাকে মুরল্লী উপাধি দেন। কোন জায়গা জমি না থাকায় অভাব অনাটনের সংসার চালাতে তিনি ঝাটার কাটি বিক্রী করতেন। বিভিন্ন ঘাটে ও হাট-বাজারে কুলি গিরি করতেন। সংসার নির্বাহের পর গচ্ছিত সকল অর্থ একদিন তিনি বিজ্ঞানী পিসি রায়ের একটি প্রতিষ্ঠানে দান করেন। তার দানে পি,সি রায় বিস্মিত হয়ে তাকে শ্রেষ্ঠ দানবীর খেতাব দেন। এছাড়াও তিনি পাইকগাছা থেকে তালা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার দুপাশে শত শত গাছ লাগিয়ে মানবতার কল্যাণে নজরবিহীন দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেন। মেহের চলে গেলেও মানবতার কল্যাণে তিনি যে অবদান রেখে গেছেন তা এলাকার মানুষের কাছে আজও অমর হয়ে আছে।